
সৈয়দুল কাদের::
কক্সবাজার থেকে রাতের বেলায় ফ্লাইট চালু করার সিদ্ধান্ত আবারো পিছিয়ে যাওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে শুরু করার সিদ্ধান্তের কথা কর্তৃপক্ষ পূর্বে জানালেও তা সামান্য পিছিয়ে যেতে পারে। দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র ও বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতের শহর কক্সবাজারে বর্তমানে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারলেও ফেব্রুয়ারি থেকে রাতেও চলবে বিমান এমন কথা বলেছিলেন জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ এমপি।
কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে আর শুরু হচ্ছে না কক্সবাজার থেকে রাতের বেলায় ফ্লাইট চলাচল। তবে কবে শুরু হবে তাও নিশ্চিত করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। ফলে আবারো পিছিয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে রাতের বেলায় ফ্লাইট চলাচলের বিষয়টি।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শেষ হওয়ার পথে। কোভিডের কারণে কিছুটা বাড়তি সময় লাগলেও, আশা করছি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট চলাচল শুরু না হলেও চালু হতে তেমন বিলম্ব হবে না।
প্রাপ্ত তথ্যমতে গত ১৪ জানুয়ারি কক্সবাজার বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের কাজ পরিদর্শন করেন জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। এসময় আব্দুস শহীদ এমপি বলেন কক্সবাজারের এই বিমানবন্দরকে ঘিরে তৈরি হবে আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব। সমুদ্র ছুঁয়ে নামবে বিমান। এটি বাংলাদেশের এভিয়েশনখাতে মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত হলে, স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক বাড়বে।
কক্সবাজারের ব্যবসায়ি অরুপ অধীকারি বলেন রাতের বেলায় ফ্লাইট চালু হলে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প ও ব্যবসায় ব্যাপক অগ্রগতি হবে। তবে সিদ্ধান্ত বারবার পিছিয়ে যাওয়ায় আমরা আশাহত হচ্ছি। বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে যাত্রীর প্রচুর চাপ রয়েছে। রাতে ফ্লাইট চালু হলে যাত্রীর সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। আশাকরি দ্রুত চালু করার সিদ্ধান্ত নিবেন কর্তৃপক্ষ।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুট এবং প্রস্থ ১২০ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০০ ফুট করা হয়েছিল ২০১৭ সালে। রানওয়েটির ১ হাজার ৩০০ ফুট থাকবে বাঁকখালী নদী ও বঙ্গপোসাগরের মোহনায়। মূলত নদীর বুক ছুঁয়েই বিমান ওঠানামা করবে এখানে।
রানওয়ে রক্ষাকারী বাঁধের পর হবে রানওয়ের শোভাবর্ধন ও নির্দেশক বাতি স্থাপন। স্থাপন করা হয়েছে এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড, আলোক ব্যবস্থা। একসঙ্গে এক হাজার যাত্রীকে সেবা দিতে এক লাখ ১০ হাজার বর্গফুটের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বোয়িং ৭৭৭- এর মতো বিমান অবতরণে উপযুক্ত অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত নির্মাণ শ্রমিকরা। এখানে ট্যাক্সিওয়ে উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। থাকবে ভিআইপিদের জন্য বিশেষ সুবিধা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে বিশ্বের দরবারে কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে ২০১৭ সালে সম্প্রসারিত এই রানওয়েতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণের মধ্যদিয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ওই সময়ই রানওয়েটি বিশ্বমানে উন্নীত করার নির্দেশ দেন তিনি। তারই অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে স¤প্রসারণ প্রকল্প নেয় সরকার। এতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
পাঠকের মতামত